আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, আগুন নিয়ে খেলবেন না। সারা ভারতে আগুন জ্বালাবেন না। বিভেদের রাজনীতি করবেন না। শান্তি রক্ষা করুন। আর যদি লোকদের গায়ে হাত পড়ে, মানুষের গায়ে হাত পড়ে-সে বাঙালি হোক, পাঞ্জাবি, বিহারি, রাজস্থানি, দলিত, তফসালি জাতি বা সাধারণ মানুষই হোক আমরা কিন্তু ছেড়ে কথা বলবো না। কারণ আমাদের সরকার মানুষের সরকার, মানুষের জন্য সরকার, মানুষের দ্বারা সরকার।
বুধবার পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের আমোদপুরে জঙ্গলমহল উৎসবের সূচনা অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি)’র নামে অাসামে বাঙালি খেদাও’র অভিযোগ তুলে এই এই হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, অাসামে বাঙালি খেদাও করছে। আমি সব রাজ্যকে ভালোবাসি, সব রাজ্যেই অন্য রাজ্যের মানুষ থাকে। কারণ এটা তাদের অধিকার। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে লোক কাজের জন্য যায় এবং কাজকে ভালোবেসেই সংসার তৈরি করে…অথচ গত ত্রিশ-চল্লিশ বছর ধরে যারা অাসামে আছে, আজকে তাদের সবাইকে তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। নাগরিকত্ব আইনের নামে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখের বেশি মানুষকে তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।
এসময় দিল্লির শাসক দলকে মমতার প্রশ্ন- আজ যদি ১.৩০ কোটি মানুষকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় তবে তারা কোথায় যাবে? তাছাড়া আমি যদি এ কথা না বলি আর কে বলবে, কারণ অাসামের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত রয়েছে। অাসামে কোন গণ্ডগোল হয় তার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গেও পড়বে। তেমনি পশ্চিমবঙ্গে গণ্ডগোল হলে অাসামেও তার প্রভাব পড়বে। আমরা চাই সব রাজ্য শান্তিতে থাক।
মমতার অভিমত ‘অাসামের কোন মানুষ যদি পশ্চিমবঙ্গে থাকে তবে আমরা বুকে করে স্থান দেব, তেমনি পশ্চিমবঙ্গের কেউ যদি অাসামে থাকে তাকেও বুকে করে স্থান দিতে হবে-এটাই নিয়ম। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, মুর্শিদাবাদ, মালদা, বর্ধমান, বীরভূমের ভোটার যারা অাসামে কাজ করতে গেছেন-তাদের বলা হচ্ছে সবাইকে মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।
ভারতের ‘সিটিজেন্সশিপ অ্যাক্ট’র প্রতিবাদে আগামীকাল দিল্লিতে সংসদের সামনে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল কংগ্রেস সংসদরা এক সভা করবেন ঘোষণা দেন মমতা।
তিনি বলেন, সিটিজেন্স অ্যাক্টের নামে যে অত্যাচার শুরু হয়েছে তার প্রতিবাদে এই ধরণা করা হবে। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু। আমরা চাই সারা ভারত শান্তিতে থাকুক।
উল্লেখ্য, অসমে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশিদের চিহ্নিত করতেই গত ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে প্রথম এনআরসি খসড়া (নাগরিকদের তালিকা) প্রকাশ করে অসম সরকার। ওই তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিলেন মোট ৩.২৯ কোটি মানুষ। এর মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর অবধি ১.৯০ কোটি মানুষের নাম এসেছে। অনিশ্চয়তায় ঝুলছে বাকি ১.৩৯ কোটির নাম।